মিরপুর বিআরটিএ দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ সহকারী পরিচালক ইমরানের বিরুদ্ধে

সুমন খান:

রাজধানীর মিরপুর-১৩ এ অবস্থিত বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো-০১ অফিস দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সেখানে বর্তমানে কর্মরত শেখ মোঃ ইমরান, সহকারী পরিচালক—তার বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতি ও অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

দালালচক্রের স্বর্গরাজ্য:
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মিরপুর বিআরটিএ অফিস কার্যত দালালদের দখলে। সাধারণ মানুষ সরাসরি সেবা পেতে গেলে নানা অজুহাতে হয়রানির শিকার হন। অথচ দালালের মাধ্যমে গেলে অল্প সময়েই কাঙ্ক্ষিত কাজ হয়ে যায়—তবে বিনিময়ে গুনতে হয় মোটা অঙ্কের টাকা। এই দালালচক্রের পেছনে শক্তিশালী মদদদাতা হিসেবে উঠে এসেছে সহকারী পরিচালক শেখ মোঃ ইমরানের নাম।

ঘুষ-অনিয়মের অঘোষিত নিয়ম:
অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস নবায়নসহ যেকোনো কাজে সরকারি ফি’র বাইরে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। অভিযোগ রয়েছে, এসব ঘুষের বড় অংশ নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট মহলে পৌঁছে যায়। ফলে অনিয়ম যেন অঘোষিত নিয়মে পরিণত হয়েছে।

ভুয়া কাগজে গাড়ি রেজিস্ট্রেশন:
আরেকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো—ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইমরানের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহযোগিতা ছাড়া এসব বেআইনি কার্যক্রম সম্ভব নয়। এর ফলে রাষ্ট্র বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে, আর সড়কে বেআইনি যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, শেখ মোঃ ইমরান এই অবৈধ ব্যবসা করে গাড়ি-বাড়ি করেছেন। শুধু তাই নয়, টাকার শহরে কয়েকটি বাড়ি এবং ফ্ল্যাটও রয়েছে। আরও অভিযোগ রয়েছে, তার মিরপুরে দুইটি বাড়ি আছে, মোহাম্মদপুর ও বসিলা ব্রিজের আবাসিক এলাকায় কয়েকটি কারখানাও গড়ে তুলেছেন। শুধু তাই নয়, তার স্ত্রী এবং সন্তানদের অনেকেরই ব্যাংক ব্যালেন্স আছে বলে অনেকে অভিযোগ করেন।

ভুক্তভোগীদের আর্তনাদ:
একজন ভুক্তভোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন—সরকার নির্ধারিত ফি জমা দিয়েও আমরা সেবা পাই না। ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। দালালের কাছে গেলে সব সহজ, কিন্তু নিজেরা গেলে হয়রানি ছাড়া কিছুই নেই।

জনমনে ক্ষোভ:
সচেতন মহল মনে করছে, একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে এমন দুর্নীতি চলতে থাকলে দেশের সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে পড়বে। তাই অবিলম্বে শেখ মোঃ ইমরানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তদন্ত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে জনমনে।

গণমাধ্যম কর্মী তার কাছে জানতে চাইলে, “আপনার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে, এগুলো কি সত্য না মিথ্যা?”
সে উত্তরে বলেন, “আমি যদি কারো পক্ষে যাই তাহলে ভালো, আর যদি কোন বিপক্ষে যাই তাহলে আমি খারাপ; অভিযোগের শেষ নেই। কে শুনে কার কথা, তার যে কথা সেই কাজ।” হঠাৎ করে একটি মুঠোফোনে আসলো, “আমার একটি কাজ করে দিতে হবে।” তার চোখের এবং হাতের ইশারায় সে কথাগুলো এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। মেসেজের মাধ্যমে দুই দালালকে ডেকে তার ফাইলগুলো অন্য রুমে নিয়ে কাজ করার জন্য নির্দেশ দেন।

নিউজটি আপনার স্যোসাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *