মৃত্যুঞ্জয়ী সাজ্জাদ আল ইসলাম: রাজপথের অদম্য কণ্ঠস্বর

  1. মোঃআনজার শাহ

শিকল হাতে হাইকোর্টের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ থেকে শুরু করে কেরানীগঞ্জের দখলদার-চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে নিরলস সংগ্রাম সাজ্জাদ আল ইসলামের রাজনৈতিক যাত্রা আপসহীন সাহসিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক গণআন্দোলন পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি প্রমাণ করেছেন নীতি ও আদর্শের প্রতি তার অটুট অঙ্গীকার।
শিকলবন্দী প্রতিবাদ যেভাবে আলোচনায়
২০২১ সালের ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রনেতা আসিফ মাহমুদসহ ৫৪ জন গ্রেফতার হলে, কেরানীগঞ্জের এই বিপ্লবী কণ্ঠস্বর নীরব দর্শক হয়ে থাকেননি। হাতে শিকল বেঁধে হাইকোর্টের সামনে অবস্থান নিয়ে তিনি তুলে ধরেন তীব্র প্রতিবাদ। পুলিশ তাকে ঘিরে ফেললেও ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান সহ সহযোদ্ধাদের প্রচেষ্টায় তিনি মুক্ত হন।
এই ঘটনা শুধু একটি প্রতিবাদী কর্মসূচি ছিল না, বরং তা প্রমাণ করেছিল সাজ্জাদ আল ইসলামের অকুতোভয় মনোভাব এবং সহযোদ্ধাদের প্রতি দায়বদ্ধতা।
কোটা আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থান
২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল সাজ্জাদ আল ইসলামের সংগ্রামী যাত্রার প্রথম বড় পদক্ষেপ। তখন থেকেই তিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের অন্যতম সংগঠক হিসেবে ভিপি নূর হাসান এবং নাহিদ ইসলামের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছেন প্রতিটি ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য।
দমন-পীড়ন, হামলা, গ্রেপ্তারের হুমকি কোনো কিছুই তাকে রাজপথ থেকে সরাতে পারেনি। বরং প্রতিটি বাধা তার সংগ্রামী চেতনাকে আরও শাণিত করেছে।
৫ আগস্টের পরও অবিচল সংগ্রাম
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের পরও সাজ্জাদ আল ইসলাম থেমে থাকেননি। কেরানীগঞ্জে দখলদার ও চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে তিনি গড়ে তুলেছেন তীব্র জনপ্রতিরোধ। মৃত্যুর হুমকি ও নানা ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও তিনি অবিচল থেকেছেন জনগণের স্বার্থ রক্ষায়।
স্থানীয় জনগণ তাকে দেখেন তাদের অধিকার আদায়ের প্রধান যোদ্ধা হিসেবে। তার নেতৃত্বে কেরানীগঞ্জে গড়ে উঠেছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী গণআন্দোলন।
তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণা
আজ সাজ্জাদ আল ইসলাম শুধু একজন ছাত্রনেতা নন,তিনি কেরানীগঞ্জের সংগ্রামের প্রতীক, তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণা এবং জনতার অদম্য কণ্ঠস্বর। তার সাহসী পদক্ষেপ এবং নিরলস সংগ্রাম প্রমাণ করে যে, নীতি ও আদর্শের প্রতি অটুট থাকলে যেকোনো প্রতিকূলতা জয় করা সম্ভব।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, সাজ্জাদ আল ইসলামের মতো তরুণ নেতারাই দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে আনতে পারেন প্রকৃত পরিবর্তন। তার জনপ্রিয়তা এবং গণমানুষের সঙ্গে সংযোগ তাকে করে তুলেছে নতুন প্রজন্মের এক উজ্জ্বল নেতৃত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *